কুমিল্লার সরকারি সিটি কলেজ
নেই উপাধ্যক্ষ, অবকাঠামো ভঙ্গুর
আবদুল্লাহ আল মারুফ
কুমিল্লার সরকারি সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠা ১৯৬৬ সালে। সাধারণ কলেজের স্বীকৃতি পায় ২০১৬ সালে। কিন্তু পূর্বের সাত পদের শিক্ষকদের দিয়েই চলছে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। নতুন পদ সৃজন না হওয়ায় ও অবকাঠামো সংকটে ব্যাহত হচ্ছে কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম।
কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজটি কুমিল্লা নগরের টমছমব্রিজ সংলগ্ন আশ্রাফপুর এলাকায় ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন নাম ছিল গভ. কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা। ২০১৬ সালের ১২ মে এক প্রজ্ঞাপনজারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রমভুক্ত করে এর নামকরণ কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজ করা হয়। এ সময় জেলার অন্যান্য সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় এটিকেও কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে ন্যস্ত করে।
সোমবার পরিদর্শনে দিয়ে দেখা যায়, কলেজটির কোনো সড়ক নেই। দুপাশের উঁচু উঁচু ভবনের মাঝের কাঁচা গলি দিয়ে কলেজে প্রবেশ করছে শিক্ষার্থীরা। কলেজে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে কচুরিপানা আর জঙ্গলে ভর্তি একটি বিশাল ডোবা। আশপাশের সব এলাকা থেকে নিচু হওয়াতে পানি জমে আছে পুরো ক্যাম্পাসে। একাডেমিক তিন তলা ভবনের নিচ তলায় অধ্যক্ষের কার্যালয়। তার পাশেই কক্ষে থাকেন গার্ডরা। এরপরেই শিক্ষক মিলনায়তন। সেখানকার পুরোনো চেয়ারে বসেন শিক্ষকরা। অধ্যক্ষের কক্ষের বিপরীত পাশে অফিস সহায়কের কক্ষ। তার কক্ষের অধিকাংশ চেয়ারই ভাঙা।
দ্বিতীয় তলায় আছে কম্পিউটার ল্যাব। ২০ জনের কম্পিউটার ল্যাবে ঝুলছে তালা। খোলা জানালায় দেখা যায় ল্যাবের ধুলোবালি জমা জিনিসপত্র। এখানে করিডরো পড়ে আছে ভাঙাচোরা টেবিল। আর শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের ওয়াশরুমের দুর্গন্ধ যেন নাক বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তৃতীয় তলায় আছে ক্লাসরুম। সেখানে পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। পুরো ক্লাসে নেই পর্যাপ্ত পাখা, তাই পরীক্ষার হলেই ঘামছে শিক্ষার্থীরা। আর ভাঙা জানালার ফাঁকে বৃষ্টি পড়ছে ভবনের অভ্যন্তরে। কলেজের শ্রেণি কার্যক্রমের জন্য আছে আরও একটি পুরোনো ভবন। সেটির সংস্কার কাজ চলমান।
কলেজের মিলনায়তনে দেখা হয় কলেজের শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জামসেদুল আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, ২০১৬ সালে কলেজটি সাধারণ কলেজ হিসেবে রূপ নিলে কলেজের আসন সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু আসনের সাথে বাড়েনি শিক্ষক। বর্তমানে কলেজের আসন সংখ্যা এক হাজার ৫০০টি। যার মাঝে প্রতিবর্ষে বিজ্ঞান বিভাগের ২৫০, মানবিক ২৫০ ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২৫০টি কওে আসন রয়েছে। কলেজে শিক্ষকদের সাতটি পদ রয়েছে। ২০১৬ সালের পর থেকে আমরা পদ সৃজনের আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো পদ সৃজন হয়নি। বর্তমানে কলেজের ওএসডি হওয়া ও বিশেষভাবে দায়িত্ব দেয়া মোট ১৯ শিক্ষক রয়েছেন। আছেন তিনজন খণ্ডকালীন শিক্ষক। কলেজের ব্যবস্থাপনা ও পৌরনীতি বিভাগে কোনো শিক্ষকই নেই।
চাহিদার অর্ধেকও নেই শিক্ষক
কলেজ কর্তৃক সম্প্রতি পাঠপানো সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো পদ সৃষ্টির একটি প্রস্তাবনাপত্র থেকে জানা গেছে, কলেজের বাংলা বিভাগের কোনো পদ সৃষ্ট নেই। কিন্তু প্রয়োজন একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষক। ইংরেজি বিভাগের একটি সহকারী অধ্যাপক পদ সৃষ্ট থাকলেও প্রয়োজন আরও একজন প্রভাষক। আইসিটি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, সমাজকর্ম, ভূগোল, যুক্তিবিদ্যা, ইসলাম শিক্ষা, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা ও কৃষিবিজ্ঞানে কোনো পদ সৃজন নেই। কিন্তু প্রত্যেক বিভাগেই প্রয়োজন একজন করে সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক। সব মিলিয়ে কলেজে ৪০টি পদে শিক্ষক প্রয়োজন।
কলেজের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, কলেজটির চারপাশেই সমস্যা। কর্মকর্তা সংকটের সাথে কর্মচারী সংকটের কারণে ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নিজেদের কাজের পর আরও বাড়তি কাজ করলে ক্লাস করাতে বেগ পেতে হয়। দেড় একর কলেজ সীমানার প্রায় অর্ধেক ডোবায় ভর্তি। ডোবার কারণে সেখানে বিষাক্ত সাপ ও পোকামাকড় বাসা বেঁধেছে। সেগুলো প্রায়শই ভবনের ফটকে ও কক্ষে চলে আসে। এছাড়াও ৬টি ক্লাস রুম কলেজটির জন্য পর্যাপ্ত নয়। নেই বেঞ্চ। তাই অনেক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ক্লাস করে।
কলেজের মানবিক বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র আলী আশ্রাফ মজুমদার বলেন, আমাদের কলেজের শুধু সংকট। ক্লাসরুম নেই। বেঞ্চ নেই। অডিটরিয়াম নেই। ডিজিটাল কনফারেন্সরুম নেই।
কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, আমাদের ভালো কোনো ল্যাব নেই। যেটি আছে নাম করার জন্য। এখানে কোনো কাজ করা যায় না। এছাড়াও ২০ জনের কম্পিউটার ল্যাবও প্রায়শই তালা মারা থাকে। আবাসাকি হল না থাকার সমস্যার বিষয়ও তুলে ধরেন এই শিক্ষার্থী।
কলেজ অধ্যক্ষ সৈয়দ আহমেদ বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই সরকার ছাড়া সমস্যার সমাধান করা যাবে না। এই কলেজের অনেক সমস্যা। সমাধানের জন্য আমরা শিক্ষা প্রকৌশলকে জানিয়েছি। তারা কাজ করছে। অনেক কাজ প্রক্রিয়াধীন। তবে ডোবার জন্য কোন আবেদন করিনি। কারণ আবেদন করে লাভ হয় না।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা আমার শিক্ষক নিয়ে। এছাড়াও কম্পিউটার ল্যাবের প্রকল্প শেষ হওয়াতে সেটিরও সংস্কার করতে পারছি না। আশা করি, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয় বিবেচনায় নিবেন।
কুমিল্লার সরকারি সিটি কলেজের প্রতিষ্ঠা ১৯৬৬ সালে। সাধারণ কলেজের স্বীকৃতি পায় ২০১৬ সালে। কিন্তু পূর্বের সাত পদের শিক্ষকদের দিয়েই চলছে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। নতুন পদ সৃজন না হওয়ায় ও অবকাঠামো সংকটে ব্যাহত হচ্ছে কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম।
কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজটি কুমিল্লা নগরের টমছমব্রিজ সংলগ্ন আশ্রাফপুর এলাকায় ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন নাম ছিল গভ. কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা। ২০১৬ সালের ১২ মে এক প্রজ্ঞাপনজারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রমভুক্ত করে এর নামকরণ কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজ করা হয়। এ সময় জেলার অন্যান্য সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় এটিকেও কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে ন্যস্ত করে।
সোমবার পরিদর্শনে দিয়ে দেখা যায়, কলেজটির কোনো সড়ক নেই। দুপাশের উঁচু উঁচু ভবনের মাঝের কাঁচা গলি দিয়ে কলেজে প্রবেশ করছে শিক্ষার্থীরা। কলেজে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে কচুরিপানা আর জঙ্গলে ভর্তি একটি বিশাল ডোবা। আশপাশের সব এলাকা থেকে নিচু হওয়াতে পানি জমে আছে পুরো ক্যাম্পাসে। একাডেমিক তিন তলা ভবনের নিচ তলায় অধ্যক্ষের কার্যালয়। তার পাশেই কক্ষে থাকেন গার্ডরা। এরপরেই শিক্ষক মিলনায়তন। সেখানকার পুরোনো চেয়ারে বসেন শিক্ষকরা। অধ্যক্ষের কক্ষের বিপরীত পাশে অফিস সহায়কের কক্ষ। তার কক্ষের অধিকাংশ চেয়ারই ভাঙা।
দ্বিতীয় তলায় আছে কম্পিউটার ল্যাব। ২০ জনের কম্পিউটার ল্যাবে ঝুলছে তালা। খোলা জানালায় দেখা যায় ল্যাবের ধুলোবালি জমা জিনিসপত্র। এখানে করিডরো পড়ে আছে ভাঙাচোরা টেবিল। আর শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের ওয়াশরুমের দুর্গন্ধ যেন নাক বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তৃতীয় তলায় আছে ক্লাসরুম। সেখানে পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। পুরো ক্লাসে নেই পর্যাপ্ত পাখা, তাই পরীক্ষার হলেই ঘামছে শিক্ষার্থীরা। আর ভাঙা জানালার ফাঁকে বৃষ্টি পড়ছে ভবনের অভ্যন্তরে। কলেজের শ্রেণি কার্যক্রমের জন্য আছে আরও একটি পুরোনো ভবন। সেটির সংস্কার কাজ চলমান।
কলেজের মিলনায়তনে দেখা হয় কলেজের শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জামসেদুল আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, ২০১৬ সালে কলেজটি সাধারণ কলেজ হিসেবে রূপ নিলে কলেজের আসন সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু আসনের সাথে বাড়েনি শিক্ষক। বর্তমানে কলেজের আসন সংখ্যা এক হাজার ৫০০টি। যার মাঝে প্রতিবর্ষে বিজ্ঞান বিভাগের ২৫০, মানবিক ২৫০ ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২৫০টি কওে আসন রয়েছে। কলেজে শিক্ষকদের সাতটি পদ রয়েছে। ২০১৬ সালের পর থেকে আমরা পদ সৃজনের আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো পদ সৃজন হয়নি। বর্তমানে কলেজের ওএসডি হওয়া ও বিশেষভাবে দায়িত্ব দেয়া মোট ১৯ শিক্ষক রয়েছেন। আছেন তিনজন খণ্ডকালীন শিক্ষক। কলেজের ব্যবস্থাপনা ও পৌরনীতি বিভাগে কোনো শিক্ষকই নেই।
চাহিদার অর্ধেকও নেই শিক্ষক
কলেজ কর্তৃক সম্প্রতি পাঠপানো সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো পদ সৃষ্টির একটি প্রস্তাবনাপত্র থেকে জানা গেছে, কলেজের বাংলা বিভাগের কোনো পদ সৃষ্ট নেই। কিন্তু প্রয়োজন একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষক। ইংরেজি বিভাগের একটি সহকারী অধ্যাপক পদ সৃষ্ট থাকলেও প্রয়োজন আরও একজন প্রভাষক। আইসিটি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, সমাজকর্ম, ভূগোল, যুক্তিবিদ্যা, ইসলাম শিক্ষা, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা ও কৃষিবিজ্ঞানে কোনো পদ সৃজন নেই। কিন্তু প্রত্যেক বিভাগেই প্রয়োজন একজন করে সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক। সব মিলিয়ে কলেজে ৪০টি পদে শিক্ষক প্রয়োজন।
কলেজের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, কলেজটির চারপাশেই সমস্যা। কর্মকর্তা সংকটের সাথে কর্মচারী সংকটের কারণে ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা নিজেদের কাজের পর আরও বাড়তি কাজ করলে ক্লাস করাতে বেগ পেতে হয়। দেড় একর কলেজ সীমানার প্রায় অর্ধেক ডোবায় ভর্তি। ডোবার কারণে সেখানে বিষাক্ত সাপ ও পোকামাকড় বাসা বেঁধেছে। সেগুলো প্রায়শই ভবনের ফটকে ও কক্ষে চলে আসে। এছাড়াও ৬টি ক্লাস রুম কলেজটির জন্য পর্যাপ্ত নয়। নেই বেঞ্চ। তাই অনেক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ক্লাস করে।
কলেজের মানবিক বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র আলী আশ্রাফ মজুমদার বলেন, আমাদের কলেজের শুধু সংকট। ক্লাসরুম নেই। বেঞ্চ নেই। অডিটরিয়াম নেই। ডিজিটাল কনফারেন্সরুম নেই।
কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, আমাদের ভালো কোনো ল্যাব নেই। যেটি আছে নাম করার জন্য। এখানে কোনো কাজ করা যায় না। এছাড়াও ২০ জনের কম্পিউটার ল্যাবও প্রায়শই তালা মারা থাকে। আবাসাকি হল না থাকার সমস্যার বিষয়ও তুলে ধরেন এই শিক্ষার্থী।
কলেজ অধ্যক্ষ সৈয়দ আহমেদ বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই সরকার ছাড়া সমস্যার সমাধান করা যাবে না। এই কলেজের অনেক সমস্যা। সমাধানের জন্য আমরা শিক্ষা প্রকৌশলকে জানিয়েছি। তারা কাজ করছে। অনেক কাজ প্রক্রিয়াধীন। তবে ডোবার জন্য কোন আবেদন করিনি। কারণ আবেদন করে লাভ হয় না।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা আমার শিক্ষক নিয়ে। এছাড়াও কম্পিউটার ল্যাবের প্রকল্প শেষ হওয়াতে সেটিরও সংস্কার করতে পারছি না। আশা করি, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয় বিবেচনায় নিবেন।