• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর
> শিক্ষা

সকাল সাড়ে নয়টার পর কলেজে গেলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়

বহুমাত্রিক অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম

গাজীউল হক সোহাগ
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫, ২২: ৪১
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫, ২২: ৫৯
logo

সকাল সাড়ে নয়টার পর কলেজে গেলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়

গাজীউল হক সোহাগ

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫, ২২: ৪১
Photo
সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম

উন্নয়ন সংস্থার কর্মী ছিলেন সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম। এরপর একে একে তিনটি কলেজের অধ্যক্ষ পদে চাকরি করেন তিনি। যে প্রতিষ্ঠানেই তিনি যোগ দিয়েছেন, সেখানেই ভালো করেছেন। কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মানুবর্তিতা , শৃঙখলা ও কঠোর পরিশ্রম করান। পাঠ্য বইয়ের বাইরে তিনি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় বলীয়ান করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেন। মনীষীদের বাণী সংরক্ষণ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। ব্যক্তিগতভাবে নিজ বাসায় গড়ে তোলেন পাঠাগার। কলেজেও করেছেন বইয়ের বিশাল সংগ্রহশালা। প্রতিদিন ১২ টি স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা কিনে পড়েন। শুক্রবারে ২০ টি পত্রিকা কিনেন। বিভিন্ন পত্রিকার সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র সংগ্রহ করে বাঁধাই করেন। প্রতিটি কলেজে বাগান করেন। ফুল, ফলে , ওষুধি গাছে ভরা থাকে তাঁর ক্যাম্পাস। কাজপাগল সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম বর্তমানে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর আলহাজ¦ মুহাম্মদ আবু জাহের ফাউন্ডেশন কলেজের অধ্যক্ষ। ৭৩ বছর বয়সী ওই অধ্যক্ষ এখনও ক্ষিপ্রতা নিয়ে চলেন। অন্যায়ের সঙ্গে কখনও আপোস করেননি। শিক্ষকতা পেশাকে দারুণভাবে উপভোগ করছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫২ সালের ১০ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ আবদুল ওহাব ও মায়ের নাম সৈয়দা মাহমুদা খাতুন। এক ভাই ও তিন বোন তাঁরা। বর্তমানে তিনি ও এক বোন বেঁচে আছে। চার বছর বয়সে বাবা কে হারান। বাবা ছিলেন একই উপজেলার ছোটধূশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বর্তমানে কাইয়ুম স্কুল শিক্ষক স্ত্রী সৈয়দা সাহাদাতুন নেছা কে নিয়ে কুমিল্লা নগরের জিলা স্কুল সড়কের সমতট ভবনে থাকেন।

সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম ১৯৭০ সালে চান্দলা করিম বক্স উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৭২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও ১৯৭৭ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

Untitled

১৯৮০ সালে তিনি সুইজারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক শিশু কল্যাণ সংস্থার কোঅর্ডিনেটর ছিলেন। ২০ বছর ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। এক পর্যায়ে ওই সংস্থার প্রকল্প শেষ হয়ে যায়। এরপর তিনি কুমিল্লা শহরে ফিরে আসেন। ২০০১ সালে তিনি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল আলহাজ¦ মুহাম্মদ আবু তাহের কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। তখন তিনি বেতন পেতেন ৫ হাজার টাকা। ওই টাকায় তাঁর বাড়ি ভাড়া, তিন সন্তান ও খাওয়ার খরচ মেলে না। ২০০২ সালে কলেজের অধ্যক্ষের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি পুনরায় আরেকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি নেন ২৫ হাজার টাকা বেতনে। প্রতি সপ্তাহে তিনি নোয়াখালীর কর্মস্থল থেকে কুমিল্লার বাসায় বৃহস্পতিবারে আসেন। তখন শশীদল কলেজের শিক্ষক, এলাকার লোকজন তাঁকে কলেজে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। বেতন ধরা হয় ১১ হাজার টাকা। কাইয়ুম গ্রামের মানুষের কথা ভেবে এনজিওর চাকরি ছেড়ে পুনরায় কলেজে যোগ দেন। তাঁর সময়ে ২২৮ জন শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হয়। ২০০৩ সালে ঝরে পড়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৬ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৪৬ জন। ওই সময়ে তিনজন অধ্যক্ষ বদল হয়। সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম এ কলেজে ফিরে আসেন ২০০৪ সালে। ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর এই কলেজ থেকে অবসরে যান। ওই সময়ে এ কলেজ কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসিতে শতকরা পাসের হারে শীর্ষ ১০ কলেজের মধ্যে অন্তত সাতবার ছিল। তাঁর সময়ে ট্রেন থামিয়ে কলেজের এমপিওভুক্তি আদায় করে নেওয়া হয়।

চার মাস বাসায় বসে সময় কাটান তিনি। ২০১৬ সালের ২ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ কলেজে যোগ দেন। ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ওই কলেজে ছিলেন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের মে মাসে যোগদান করেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর আলহাজ¦ মুহাম্মদ আবু জাহের ফাউন্ডেশন কলেজের অধ্যক্ষ পদে। তিন কলেজেই তিনি বাগান করেন। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পরীক্ষা নিতেন। দুর্বল শিক্ষার্থীদের আলাদা করে যত্ন নিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করতেন।

তাঁর সহকর্মীদের ভাষ্য সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম আপাদমস্তক একজন পড়ুয়া ব্যক্তি। তিনি পাঠ্যবইয়ের বাইরে বই ও পত্রিকা পড়ে সময় কাটান। সবার আগে কলেজে যান। সবার পরে কলেজ থেকে বের হন।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম বলেন,‘ সকাল সাড়ে নয়টার পর কলেজে গেলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়। সুখী আমি কোন অপূর্ণতা নেই। এই বয়সেও কলেজের দায়িত্বে আছি। ভালো বেতনে কাজ করছি। ’

20

সৈয়দ আবদুল কাইয়ুমের রয়েছে বিশাল পাঠাগার। নিজ বাসায় তিনি ছোট ছোট তাকে বইয়ের দুনিয়া রেখেছেন। তাঁর বাসার বিভিন্ন স্থানে বই আর বই। পত্রিকা আর পত্রিকা। ব্যক্তিগত সংগ্রহে তাঁর বইয়ের সংখ্যা অন্তত চার হাজার। শিক্ষার সৌন্দর্য নামে তিনি একটি বই বের করেন। আগামীতে তিনি নীতি নৈতিকতা ও বই পড়ার ওপর বই লিখবেন।

তাঁর তিন সন্তান। বড় ছেলে সৈয়দ আবদুল্লাহ তানজীম আল বায়েজীদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করে বর্তমানে ঢাকায় আমেরিকান দূতাবাসে চাকরি করছেন। ছোট ছেলে একটি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় থেকে বিবিএ করে চাকরি করছেন। একমাত্র মেয়ে সৈয়দা তাহসীন সিফাত কাশমীর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে বাগমারা ২০ শয্যা হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আছেন। মেয়ের জামাতা সাদমান সারওয়ারও একই মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে কাজ করছেন।

জানতে চাইলে সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম বলেন,‘ শিক্ষকতা করব, ধারণাও ছিল না। তবে আমার বাবা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আমি বলি, বাইচ্যান্স অধ্যক্ষ আমি। সীমিত জ্ঞান দিয়ে চেষ্টা করেছি তিন কলেজ কে সব দিকে সমৃদ্ধ করতে। শিক্ষার লক্ষ্য কেবল জিপিএ-৫ আনা নয়। শিক্ষার সৌন্দর্য হল জাগতিক বিষয়ে ধারণা তৈরি করা। পড়াশোনার বাইরের বিশাল জগতকে উপভোগ করা। ’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মো. আলমগীর খান বলেন,‘ সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম গুণী লোক। স্পষ্টবাদী। অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি সফল। ’

কাইয়ুমের সহধর্মিণী সৈয়দা সাহাদাতুন নেছার ভাষ্য, পুরো বাসা জুড়ে তাঁর বই , পত্রিকা। এগুলোতে ধূলো জমে যায়। সরাতে দেয় না। আমি পরিষ্কার করি। রান্নাঘরের কোনা, শোয়ার ঘর, খাবার কক্ষ, অতিথিকক্ষ সব স্থানে শুধু বই আর বই। বই-ই ওনার প্রাণ।

Thumbnail image
সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম

উন্নয়ন সংস্থার কর্মী ছিলেন সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম। এরপর একে একে তিনটি কলেজের অধ্যক্ষ পদে চাকরি করেন তিনি। যে প্রতিষ্ঠানেই তিনি যোগ দিয়েছেন, সেখানেই ভালো করেছেন। কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মানুবর্তিতা , শৃঙখলা ও কঠোর পরিশ্রম করান। পাঠ্য বইয়ের বাইরে তিনি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় বলীয়ান করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেন। মনীষীদের বাণী সংরক্ষণ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। ব্যক্তিগতভাবে নিজ বাসায় গড়ে তোলেন পাঠাগার। কলেজেও করেছেন বইয়ের বিশাল সংগ্রহশালা। প্রতিদিন ১২ টি স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা কিনে পড়েন। শুক্রবারে ২০ টি পত্রিকা কিনেন। বিভিন্ন পত্রিকার সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র সংগ্রহ করে বাঁধাই করেন। প্রতিটি কলেজে বাগান করেন। ফুল, ফলে , ওষুধি গাছে ভরা থাকে তাঁর ক্যাম্পাস। কাজপাগল সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম বর্তমানে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর আলহাজ¦ মুহাম্মদ আবু জাহের ফাউন্ডেশন কলেজের অধ্যক্ষ। ৭৩ বছর বয়সী ওই অধ্যক্ষ এখনও ক্ষিপ্রতা নিয়ে চলেন। অন্যায়ের সঙ্গে কখনও আপোস করেননি। শিক্ষকতা পেশাকে দারুণভাবে উপভোগ করছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫২ সালের ১০ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ আবদুল ওহাব ও মায়ের নাম সৈয়দা মাহমুদা খাতুন। এক ভাই ও তিন বোন তাঁরা। বর্তমানে তিনি ও এক বোন বেঁচে আছে। চার বছর বয়সে বাবা কে হারান। বাবা ছিলেন একই উপজেলার ছোটধূশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বর্তমানে কাইয়ুম স্কুল শিক্ষক স্ত্রী সৈয়দা সাহাদাতুন নেছা কে নিয়ে কুমিল্লা নগরের জিলা স্কুল সড়কের সমতট ভবনে থাকেন।

সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম ১৯৭০ সালে চান্দলা করিম বক্স উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৭২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও ১৯৭৭ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

Untitled

১৯৮০ সালে তিনি সুইজারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক শিশু কল্যাণ সংস্থার কোঅর্ডিনেটর ছিলেন। ২০ বছর ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। এক পর্যায়ে ওই সংস্থার প্রকল্প শেষ হয়ে যায়। এরপর তিনি কুমিল্লা শহরে ফিরে আসেন। ২০০১ সালে তিনি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল আলহাজ¦ মুহাম্মদ আবু তাহের কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। তখন তিনি বেতন পেতেন ৫ হাজার টাকা। ওই টাকায় তাঁর বাড়ি ভাড়া, তিন সন্তান ও খাওয়ার খরচ মেলে না। ২০০২ সালে কলেজের অধ্যক্ষের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি পুনরায় আরেকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি নেন ২৫ হাজার টাকা বেতনে। প্রতি সপ্তাহে তিনি নোয়াখালীর কর্মস্থল থেকে কুমিল্লার বাসায় বৃহস্পতিবারে আসেন। তখন শশীদল কলেজের শিক্ষক, এলাকার লোকজন তাঁকে কলেজে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। বেতন ধরা হয় ১১ হাজার টাকা। কাইয়ুম গ্রামের মানুষের কথা ভেবে এনজিওর চাকরি ছেড়ে পুনরায় কলেজে যোগ দেন। তাঁর সময়ে ২২৮ জন শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হয়। ২০০৩ সালে ঝরে পড়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৬ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৪৬ জন। ওই সময়ে তিনজন অধ্যক্ষ বদল হয়। সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম এ কলেজে ফিরে আসেন ২০০৪ সালে। ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর এই কলেজ থেকে অবসরে যান। ওই সময়ে এ কলেজ কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসিতে শতকরা পাসের হারে শীর্ষ ১০ কলেজের মধ্যে অন্তত সাতবার ছিল। তাঁর সময়ে ট্রেন থামিয়ে কলেজের এমপিওভুক্তি আদায় করে নেওয়া হয়।

চার মাস বাসায় বসে সময় কাটান তিনি। ২০১৬ সালের ২ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ কলেজে যোগ দেন। ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ওই কলেজে ছিলেন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের মে মাসে যোগদান করেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর আলহাজ¦ মুহাম্মদ আবু জাহের ফাউন্ডেশন কলেজের অধ্যক্ষ পদে। তিন কলেজেই তিনি বাগান করেন। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পরীক্ষা নিতেন। দুর্বল শিক্ষার্থীদের আলাদা করে যত্ন নিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করতেন।

তাঁর সহকর্মীদের ভাষ্য সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম আপাদমস্তক একজন পড়ুয়া ব্যক্তি। তিনি পাঠ্যবইয়ের বাইরে বই ও পত্রিকা পড়ে সময় কাটান। সবার আগে কলেজে যান। সবার পরে কলেজ থেকে বের হন।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম বলেন,‘ সকাল সাড়ে নয়টার পর কলেজে গেলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়। সুখী আমি কোন অপূর্ণতা নেই। এই বয়সেও কলেজের দায়িত্বে আছি। ভালো বেতনে কাজ করছি। ’

20

সৈয়দ আবদুল কাইয়ুমের রয়েছে বিশাল পাঠাগার। নিজ বাসায় তিনি ছোট ছোট তাকে বইয়ের দুনিয়া রেখেছেন। তাঁর বাসার বিভিন্ন স্থানে বই আর বই। পত্রিকা আর পত্রিকা। ব্যক্তিগত সংগ্রহে তাঁর বইয়ের সংখ্যা অন্তত চার হাজার। শিক্ষার সৌন্দর্য নামে তিনি একটি বই বের করেন। আগামীতে তিনি নীতি নৈতিকতা ও বই পড়ার ওপর বই লিখবেন।

তাঁর তিন সন্তান। বড় ছেলে সৈয়দ আবদুল্লাহ তানজীম আল বায়েজীদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করে বর্তমানে ঢাকায় আমেরিকান দূতাবাসে চাকরি করছেন। ছোট ছেলে একটি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় থেকে বিবিএ করে চাকরি করছেন। একমাত্র মেয়ে সৈয়দা তাহসীন সিফাত কাশমীর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে বাগমারা ২০ শয্যা হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আছেন। মেয়ের জামাতা সাদমান সারওয়ারও একই মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে কাজ করছেন।

জানতে চাইলে সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম বলেন,‘ শিক্ষকতা করব, ধারণাও ছিল না। তবে আমার বাবা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আমি বলি, বাইচ্যান্স অধ্যক্ষ আমি। সীমিত জ্ঞান দিয়ে চেষ্টা করেছি তিন কলেজ কে সব দিকে সমৃদ্ধ করতে। শিক্ষার লক্ষ্য কেবল জিপিএ-৫ আনা নয়। শিক্ষার সৌন্দর্য হল জাগতিক বিষয়ে ধারণা তৈরি করা। পড়াশোনার বাইরের বিশাল জগতকে উপভোগ করা। ’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মো. আলমগীর খান বলেন,‘ সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম গুণী লোক। স্পষ্টবাদী। অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি সফল। ’

কাইয়ুমের সহধর্মিণী সৈয়দা সাহাদাতুন নেছার ভাষ্য, পুরো বাসা জুড়ে তাঁর বই , পত্রিকা। এগুলোতে ধূলো জমে যায়। সরাতে দেয় না। আমি পরিষ্কার করি। রান্নাঘরের কোনা, শোয়ার ঘর, খাবার কক্ষ, অতিথিকক্ষ সব স্থানে শুধু বই আর বই। বই-ই ওনার প্রাণ।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (HSC) পরীক্ষার স্থগিতকৃত পরীক্ষাসমূহের পরিবর্তিত সময়সূচি।

২

একই দিনে হবে এইচএসসির ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত পরীক্ষা

৩

এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত ও নিজের পদত্যাগ বিষয়ে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

৪

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে 'মব' সৃষ্টির অভিযোগে এবার উচ্চমাধ্যমিক শাখায় শিক্ষকদের মানববন্ধন, ঘৃণা সমাবেশ

৫

২০২৬ সালের এসএসসি ও এইচএসসি নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা

সম্পর্কিত

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (HSC) পরীক্ষার স্থগিতকৃত পরীক্ষাসমূহের পরিবর্তিত সময়সূচি।

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (HSC) পরীক্ষার স্থগিতকৃত পরীক্ষাসমূহের পরিবর্তিত সময়সূচি।

৬ ঘণ্টা আগে
একই দিনে হবে এইচএসসির ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত পরীক্ষা

একই দিনে হবে এইচএসসির ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত পরীক্ষা

এইচএসসি ও সমমানের ২২ এবং ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত পরীক্ষা একই দিনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। তবে, স্থগিত পরীক্ষা কবে হবে তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

৯ ঘণ্টা আগে
এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত ও নিজের পদত্যাগ বিষয়ে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত ও নিজের পদত্যাগ বিষয়ে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

মাইলস্টোনের ঘটনার পর চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত হুট করে নেয়া যায় না।

৯ ঘণ্টা আগে
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে 'মব' সৃষ্টির অভিযোগে এবার উচ্চমাধ্যমিক শাখায় শিক্ষকদের মানববন্ধন,  ঘৃণা সমাবেশ

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে 'মব' সৃষ্টির অভিযোগে এবার উচ্চমাধ্যমিক শাখায় শিক্ষকদের মানববন্ধন, ঘৃণা সমাবেশ

৩ দিন আগে